বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র
জাতীয় স্থায়ী কমিটির ১৬ জুলাই ২০২৫ এ অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত সমূহ
গত ১৬ জুলাই ২০২৫ তারিখ, বুধবার, রাত ৮.৩০ টায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির গুলশান কার্যালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান। সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দ, যথাক্রমেঃ
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন মির্জা আব্বাস বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ড. আব্দুল মঈন খান জনাব নজরুল ইসলাম খান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জনাব আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী জনাব সালাহ উদ্দিন আহমেদ বেগম সেলিমা রহমান জনাব ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু মেজর (অব:) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, বীর বিক্রম অধ্যাপক ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন
(সভায় আলোচ্য বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে নিম্নে বর্ণিত সিদ্ধান্ত সমূহ গৃহীত হয়।
সভায়, বিগত ৮ জুলাই ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত সমূহের বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে মহাসচিব সভাকে অবহিত করেন।
সভায়, ১৬ জুলাই ২০২৫ গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির সভায় ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগের দূর্বৃত্ত ও সমর্থকদের হামলায় ৪ জন নিহত হওয়ায় গভীর নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে। সভা মনে করে পতিত ফ্যাসিষ্ট হাসিনা সমর্থকেরা পরিকল্পিতভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে নৎসাত করার জন্য ফ্যাসিষ্ট বিরোধী আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনকারী জাতীয় নাগরিক পার্টির সমাবেশে আক্রমনের ঘটনা ঘটায়। ফলশ্রæতিতে সরকারকে ১৪৪ ধারা ও কারফিউ জারী করতে হয়। যা এই মূহুর্তে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবার নীল নকশা বলে মনে করা হয়। সভা এই প্রসঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করে। সভা আশা করে রাজনৈতিক দলগুলো অত্যন্ত সর্তকতার সাথে তাদের কর্মসূচী নির্ধারণ করবে, অন্যথায় গণতন্ত্র বিরোধী শক্তিকে সুযোগ করে দেওয়া হবে।
সভায়, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে জাতীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য জনাব সালাহ উদ্দিন আহম্মেদ সভাকে বিস্তারিত অবহিত করেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয় আগামী কাল ১৭ জুলাই ২০২৫ রাত ৮টায় এ বিষয়ে পুনরায় আলোচনা হবে।
সভায়, অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ করে যে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে বিঘিœত করার জন্য এবং আগামী ফেব্রæয়ারি মাসে প্রতিশ্রæত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ব্যাহত করবার জন্য একটি মহল পরিকল্পিতভাবে দেশের আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে। মবোক্রেসি, হত্যা, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ইত্যাদি অপরাধ মূলক কর্মকান্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলি অযোগ্যতা এবং নির্লিপ্ততা পরিস্থিতিকে আরো অবনতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টাবৃন্দ গণমাধ্যমে শুধুই কথাই বলছেন কিন্তু কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছেন। সভা, আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য অতিদ্রæত সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারকে আহবান জানাচ্ছে।
সভায়, সম্প্রতি সংঘটিত মিডফোর্ডের নৃশংস হত্যাকান্ডে বিএনপিকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে জড়িয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের শিষ্টাচার বিবর্জিত বক্তব্য ও ¯েøাগান গোটা জাতিকে স্তম্ভিত করেছে। বিশেষ করে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বীর উত্তম, বিএনপি চেয়ারপার্সন, গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের তরুণ জনপ্রিয় নেতা জনাব তারেক রহমান সম্পর্কে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বিবর্জিত যে সকল অশ্লীল বক্তব্য ও স্লোগান গোটা জাতিকে বিক্ষুব্ধ করেছে। সভা এই সব কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানায়। সভা মনে করে এই ধরনের কর্মকান্ড শুধুমাত্র রাজনৈতিক পরিবেশকেই বিনষ্ট করবে না গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবে । সভা আশা করে সকল রাজনৈতিক দল পারস্পরিক মর্যাদা ও সৌহার্দের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে এই ধরনের অরাজনৈতিক কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকবে। সেই সঙ্গে মিডফোর্ডসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানায় এবং অবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছে।
সভা শেষে সভাপতি সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভা মুলতবী করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মহাসচিব
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি।
